দির্ঘ দিন বলিউডে ইন্ডাস্ট্রি শাসন করেছেন মাধুরী দীক্ষিত। কিন্তু এই এক নম্বর নায়িকার আসন ধরে রাখতে মাধুরীকে যথেষ্ট মাশুলও দিতে হয়েছিলো, অনেক সমালোচনা তাঁকে নিয়েও হয়েছে। কথা উঠেছে তার ভুল নিয়েও। কেরিয়ারে একটি ভুল নিয়ে অনুশোচনাও করেছিলেন মাধুরী।
জীবনে একটি নির্দিষ্ট ছবিতে অভিনয় করা যে তাঁর ঠিক হয়নি, পরে তা স্বীকারও করেছিলেন মাধুরী। ‘দয়াবান’ ছবিতে বিনোদ খন্নার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ছিল যথেষ্ট বিতর্কিতআর তাই তিনি এমন বলেছিলেন।
বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে মাধুরীকেও কেরিয়ারের শুরুতে প্রচুর স্ট্রাগল করতে হয়েছে। কঠোর পরিশ্রমের মধ্যদিয়েই শ্রীদেবী, মীনাক্ষীর হাত থেকে তার নিতে হয়েছিলো বলিউডের রাজপাট।
১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ সিনেমায় তাপস পালের বিপরীতে মাধুরী বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। তার এই প্রথম ছবি বক্স অফিসে ব্যর্থ হওয়ায় ধাক্কা খায় মাধুরীর কেরিয়ার। তারপর তিনি ‘স্বাতী, আওয়ারা বাপ, হিফাজত,উত্তর দক্ষিণ,মোহরে’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন। কিন্তু প্রত্যেকটি সিনেমায় ব্যর্থ হয় বক্স অফিসে। এমনকি, নায়ক শেখর সুমনের বিপরীতে মাধুরী ‘মানব হত্যা’ নামে একটি বি গ্রেডের ছবিতেও কাজ করেন।
কয়েক বছর যাওয়ার পরে তিনি বুঝতে পারেন এ ভাবে চললে তিনি বেশি দূর এগোতে পারবেন না। এরপর তিনি ঠিক করেন, এ বার থেকে শুধু বড় ব্যানারে নামী তারকার বিপরীতেই অভিনয় করবেন।
সে সময় তার কাছে ‘দয়াবান’ ছবির অফার আসে। মাধুরী জানতেন ছবিতে সাহসী ঘনিষ্ঠ দৃশ্য আছে। কিন্তু তিনি রাজি হন শুধু এ কথা ভেবে যে, বিনোদ খান্নার মতো তারকার সঙ্গে অভিনয় করলে তার ক্যরিয়ার এগোবে। কিন্তু এই ছবির চুম্বন ও শয্যাদৃশ্য নিয়ে চরম সমালোচনা হয়। বিতর্কের মুখে পড়েন মাধুরীও। এ বার তিনি ঠিক করেন সাহসী শয্যা আছে, এ রকম ছবিতে অভিনয় করবেন না। কিন্তু এরপর ‘পরিন্দা’ ছবির প্রস্তার পান। এ ছবিতেও সাহসী ঘনিষ্ঠ দৃশ্য আছে জানতেন মাধুরী। চিত্রনাট্য তার খুব পছন্দ হয়। কিন্তু দ্বিধায় পড়েন অন্তরঙ্গ দৃশ্য নিয়ে। শেষ অবধি তার সামনে বিধুবিনোদ জুনিয়র শিল্পীদের দিয়ে ওই দৃশ্য অভিনয় করিয়ে দেখান। এর পর মাধুরী বুঝতে পারেন যে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য হলেও তা কুরুচিকর বা দৃষ্টিকটু নয়। তিনি রাজি হন অভিনয়ে। কিন্তু এর পর তার সমস্যা হয় চুম্বনদৃশ্য নিয়ে। পরিচালককে জিজ্ঞাসা করেন, কোনও ভাবে এই দৃশ্য বাদ দেওয়া যায় কি না। এ বার বিধুবিনোদ বিরক্ত হয়ে বলেন, ছবিতে তার ওই দৃশ্য চাই না। বিধুবিনো বিরক্ত হলে মাধুরী জানতে চান তার ভুল কোথায় , তারপর পরিচালক তাঁকে বোঝান, যে এই ছবিতে তিনি মাধুরী নন, তিনি ‘পারো’। তাঁকে এই চরিত্রের মধ্যে ঢুকে অভিনয় করতে হবে।
বিধুবিনোদের কথায় মাধুরী বুঝতে পারেন । ব্যক্তিগত জীবন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে শেখেন ছবির পর্দায় করা অভিনয়কে। পেশাগত আর ব্যাক্তিগত জীবন মিলিয়ে গেলে যে সব দিক দিয়েই ক্ষতি, বুঝতে পারেন তিনি। ‘পরিন্দা’ বক্স অফিসে সফল হয়। জাতীয় পুরস্কার জয়ী এই ছবি মাধুরীকে তার ক্যারিয়ারে এক ধাক্কায় এগিয়ে দেয় অনেকটাই। পরে অনেক ছবির সাহসী দৃশ্যেই সাবলীল ভাবে অভিনয় করেন মাধুরী। তিনি স্বীকার করেছিলেন, ক্যরিয়ারের শুরুতে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে তিনি হোঁচট খেয়েছিলেন, তার অস্বস্তি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ওই অভিজ্ঞতাই তাকে পরিণত নায়িকা হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। তবে ‘দয়াবান’ এবং ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’ ছবিতে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে যে তিনি অস্বস্তিতে পড়েছিলেন, তা-ও স্বীকার করেন মাধুরী। ওই দুই ছবিতে বিনোদ খন্না এবং রঞ্জিতের আচরণও তার স্বাভাবিক মনে হয়নি বলে ঘনিষ্ঠমহলে অভিযোগ করেন তিনি।