তালাকের পর শ্বশুরের সাথে রাত কাটাতে বাধ্য হয় শাহবিনা

তা’লাক দিলে যখন তাকে বলা হয় দেবরের সঙ্গে রাত কাটালে তবেই তিনি আবার স্বামীকে বিয়ে করতে পারবেন, তখন শাহবিনা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। দেবরের সঙ্গে শুতে না-চাওয়ায় তাকে

বাড়ি থেকেও বের করে দেওয়া হয়। শাহবিনা এরপর যোগাযোগ করেন লখনৌতে ‘আলা হজরত হেল্পিং সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা নিদা খানের সঙ্গে। যার জীবনের অভিজ্ঞতাও প্রায় একই রকম। নিদা খানের বিয়ে হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের একটি অভিজাত মুসলিম পরিবারের সন্তান

উসমান রেজা খানের সঙ্গে। কিন্তু ২০১৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নিদা খান তার স্বামীর দেওয়া তিন তালাকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে যান আর সেই মামলাও জেতেন। আদালতে তিনি বলেছিলেন, তার স্বামী এত শারীরিক ও মানসিক অ’ত্যাচার করতেন যে তার গ’র্ভপাতও হয়ে গিয়েছিল।

বিবাহ-বিচ্ছিন্না নিদা খান অবশ্য তার ল’ড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজের এনজিও তৈরি করে তিনি তিন তা’লাক ও নি’কা হালা’লের ভিক্টিমদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন – আর বেরিলির শাহবিনার পাশে দাঁড়াতেও তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরই সোমবার বেরিলির শহর ইমাম মুফতি খুরশিদ আলম নিদা খান ও শাহবিনা দুজনের বিরুদ্ধেই ফতোয়া

জারি করে প্রকাশ্য বি’বৃতি দিয়েছেন, যাতে বলা হয়েছে ইসলামকে অপমান করার জন্য তাদের ধ’র্ম থেকে ‘বিতা’ড়িত করা হচ্ছে। “নিদা খান অসু’স্থ হয়ে পড়লে তাকে কোনও ওষুধ দেওয়া যাবে না। সে মারা গেলে তার জন্য কেউ নামাজ পড়বে না, কেউ তার জানাজায় যেতে পারবে না,” বলা হয়েছে ওই ফতোয়ায়, “এমন কী, কবরস্থানেও তাকে দাফন করা যাবে না।

যারা তাকে সমর্থন করবে বা তার পাশে দাঁড়াবে, তাদেরও ঠিক এই একই শা’স্তি হবে।” দারুল উলুম দেওবন্দের স্বীকৃত দারুল ইফতা ওই ফতোয়া জারি করার পর থেকেই শাহবিনা ও নিদা খানকে মে’রে ফেলার হু’মকি দেওয়া হচ্ছে বলেও তারা অভি’যোগ করেছেন। পাঁচ ব্যক্তির বি’রু’দ্ধে তারা একটি এফআইআর-ও দা’য়ের করেছেন। বেরিলির পুলিশ প্রধান অভিনন্দন সিং জানিয়েছেন,

ওই অভি’যো’গের ভিত্তিতে তারা তদ’ন্তও শুরু করেছেন। নিদা খান নিজে অবশ্য দাবি করেছেন এই সব হু’মকি-ধ’ম’কিকে তিনি মোটেই ভ’য় পাচ্ছেন না। “যারা এই সব ফতোয়া দিচ্ছে তারা পাকিস্তানে গিয়ে ওসব করুক, এ দেশে ওসবের ঠাঁই হবে না। আর আমাদের ইসলাম থেকে বের করে দেওয়ার অধিকারও কারও নেই”, বলেছেন তিনি।

তিন তালা’কের বি’রু’দ্ধে একটি বিল এখন ভা’রতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিবেচনাধীন আছে। নিকা হা’লালা বা হিল্লা’হ্‌ বিয়ে প্রথার বি’রু’দ্ধে একটি আবেদনের শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টেও। এদিকে গত কয়েক মাসে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের বেরিলিতেই অ’ন্তত ৩৫টি তিন তা’লাক ও নি’কা হালা’লার অভি’যোগ দা’য়ের করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.