না জেনে হি’জড়ার স’ঙ্গে বি’য়ে হওয়া এই না’রীর বাস্তব জী’বনের অভিজ্ঞতা

আধুনিক ভা’রতীয় না’রীদের চিন্তাভাবনা-বিবেচনা নিয়ে শুরু হয়েছে বিবিসি হিন্দির বিশেষ ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘হার চয়েস’। ১২ ভারতীয় না’রীর বাস্তব জীবনের অ’ভিজ্ঞতা,আকাঙ্ক্ষা ও বিকল্পের সন্ধান- এসবই উঠে এসেছে তাদের মুখ থেকে।তারই ধারাবাহিকতায় আজ দক্ষিণ ভারতের এক না’রীর জীবনকথা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা। তবে মে’য়েটির অনুরোধে প্রতিবেদনটিতে তার নাম-পরিচয় গো’পন রাখা হয়েছে।সেটি ছিল আমার বিয়ের প্রথম রাত।

প্রথমবার কোনো পুরু’ষের স’ঙ্গে অন্তরঙ্গ হতে চলেছিলাম আমি। প্রা’ণের বান্ধবীদের কাছ থেকে শোনা কিছু কথা আর কয়েকটা পর্নো ভিডিও দেখে আমার মনের মধ্যে প্রথম রাতের যে ছবিটি বারে বারে মনে পড়ছিল, ই’চ্ছাগুলোও জেগে উঠছিল সে রকমভাবেই। মাথা ঝুঁ’কিয়ে, হাতে দু’ধের গ্লাস নিয়ে আমি যখন শোবার ঘরে প্রবেশ করলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই ছবির মতোই সব কিছু চলছিল। আমি তখনও জানতাম না যে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার সেই স্বপ্নগুলো ভে’ঙে যাবে।

প্রথম রা’তের স্বপ্নে এ র’কমটা হওয়ার ছিল- আমি ঘরে আসার পর স্বা’মী আমাকে জড়িয়ে ধরবে, চু’ম্ব’নের স্রোতে ভাসিয়ে দেবে, আর সারা রাত ধরে আমাকে ভালোবাসবে। কিন্তু বাস্তব যে ছবিটি দেখলাম তা হল- আমি ঘরে ঢোকার আগেই আমার স্বা’মী ঘুমিয়ে পড়েছেন। ওই মুহূর্তে মনে হল আমার অ’স্তিত্বটাই যেন আমার স্বা’মী সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করলেন। আমার বয়স সেই সময়ে ছিল ৩৫। আমি কৌমার্য হারাইনি তখনও। স্বপ্নভঙ্গ কলেজে পড়ার সময়ে বা তার পরে যখন চা’করি করি, তখনও দেখতাম আমারই কাছের কোনো ছেলে আর মেয়ের মধ্যে ঘ’নি’ষ্ঠ স’ম্প’র্ক গড়ে উঠছে। তারা একে অন্যের হাত ধরে বা কাঁধে মাথা রেখে ঘুরে বেড়াত।

আমি মনে মনে ভা’বতাম, আহা! যদি আমারও এ রকম কোনো সুযোগ আসত। আমারও তো ই’চ্ছা হতো ওইভাবে কারও ঘ’নি’ষ্ঠ হতে!আমাদের পরিবারটা বেশ বড় ছিল- চার ভাই, এক বোন, ব’য়স্ক বাবা-মা। তবুও আমার সবসময়েই একা লাগত। আমার ভাইবোনদের সবারই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল।তাদের সবার পরিবার ছিল। কোনো সময়ে এটিও মনে হতো যে, ভা’ইবোনেরা কি আমার জন্য একটু চিন্তা করে? তাদের কী মনে হয় না যে আমারও বয়স হচ্ছে, তবুও আমি ততদিনও একা? আমারও তো প্রে’ম করতে ই’চ্ছা করত। একাকীত্ব গ্রাস করছিল আমাকে।কখনও কখনও মনে হতো যে, আমি খুব মো’টা- সে জন্যই আমার ই’চ্ছাগুলো পূরণ হয় না।

কিন্তু পুরু’ষ মানুষ কি মো’টা মেয়ে পছন্দ করে না? শুধু কি আমার ওজনের জন্য আ’মার পরিবার জী’বনস’ঙ্গী খুঁজে পাচ্ছে না? তা হলে কি চিরজীবন আমাকে একাই কা’টাতে হবে? এসব প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে সব সময়ে ঘুরপাক খেত।অতঃপর বিয়ে শেষমেশ আমার যখন ৩৫ বছর বয়স, তখন বছর চ’ল্লিশের একজন আমাকে বিয়ে করতে এগিয়ে এলো। যখন প্রথম দেখা করি তার স’ঙ্গে, তখনই আমার মনের মধ্যে থাকা চিন্তাগুলো তাকে জানিয়েছিলাম। সে কোনো কথারই জবাব দেয়নি। আমার মনে হতো আমার কথাগুলো যেন মন দিয়ে শুনছেই না। সবসময়ে নিচের দিকে তা’কিয়ে থাকত সে। কোনো ক’থারই জবাব দিত না; শুধু মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিত।আমি ভাবতাম আ’জকাল মে’য়েদের থেকেও অনেক বেশি লজ্জা পায় পুরু’ষ মানুষ।

আমার হবু স্বা’মীও বোধহয় সে রকম। তাই আমার কোনো কথারই জবাব দিচ্ছে না। কিন্তু বি’য়ের পর প্রথম রা’তের ঘ’টনায় আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম।আমি শুধু ভাবছিলাম সে কেন ও রকম আচরণ করল। পরের দিন সকালে আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম, সে জবাব দিল যে তার শ’রীর ভালো ছিল না। কিন্তু তার থেকে আর একটি শব্দও বার করতে পা’রিনি। প্রথম রাতের পর দ্বিতীয়, তৃতীয় রাতও কেটে গেল এ’কইভাবে। সব গোপন করা হয় আমি শা’শুড়ির কাছে বিষয়টি জা’নালাম। কিন্তু তিনিও ছে’লের পক্ষ নিয়ে বলতে লাগলেন। ‘ও লজ্জা পাচ্ছে। ছোট থেকেই মে’য়েদের সঙ্গে কথা বলতে অ’স্বস্তিবোধ করে। ছেলেদের স্কুলে পড়াশোনা করেছে তো সে জ’ন্যই। ওর কোনো দিদি বা বোন নেই, কোনো মেয়ে ব’ন্ধুও নেই। সে জন্যই এ রকম আচরণ,’ ব’লছিলেন আমার শাশুড়ি। সা’ময়িক স্বস্তি পেয়েছিলাম কথাটা শুনে। কিন্তু ব্যা’পারটি আমার মাথা থেকে কিছুতেই গেল না। ওদিকে আমার সব ইচ্ছা-আ’কাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এক এক করে ভেঙে যাচ্ছিল। শুধু যে শা’রী’রিক চা’হিদাই আমাকে কুরে কুরে খা’চ্ছিল তা নয়।

আমার স্বা’মী কোনো কথাই বলত না। আমার মনে হতে লাগল যে, ও সবসময়েই আমাকে উ’পেক্ষা করা হচ্ছে। আমার থেকে সে পা’লিয়ে পা’লিয়ে বেড়াচ্ছে। যখন কোনো না’রী পোশাক ঠিক করে, তখনও পু’রুষ মানুষ আড় চোখে সেদিকেই তাকিয়ে থাকে। কিন্তু আমি যদি রাতে সব পো’শাক খু’লেও ফেলি, তা হলেও আমার স্বা’মী সম্পূর্ণ উ’দাসীন থা’কতেন। তা হলে কি আমার ওজন তার এই ব্যবহারের কারণ? কোনো চাপে পড়ে আমাকে বি’য়ে করেছে সে? এসব প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে আ’সতে শুরু করেছিল তখন। কিন্তু এসব কথা কারও সঙ্গে যে শে’য়ার করব, সেই উপায় নেই। আর কত অ’পেক্ষা আমার প’রিবারের কারও সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার উপায় ছিল না। কারণ সেখানে সবাই মনে করতে শুরু ক’রেছিল যে আমি খুব ভালো আছি। এদিকে আ’মার অপেক্ষার সী’মারেখা ভাঙার দিকে চ’লেছে।

আমাকে এ সমস্যার সমা’ধান নিজেকেই বের করতে হবে। বে’শিরভাগ ছুটির দিনেও আমার স্বামী বা’ড়িতে থাকত না। হয় কোনো বন্ধুর বাড়িতে চলে যেত বা বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে কোথাও যেত। ঘ’টনাচক্রে সেদিন বাড়িতেই ছিল আমার স্বা’মী। আমি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে স’রাসরি জানতে চাইলাম, ‘আমাকে কি প’ছন্দ নয় তোমার? আমরা দুজনে এ’কবারের জন্যও অ,ন্ত,র,ঙ্গ হইনি এতদিনে। তোমার স’মস্যাটি কী?’ জলদি জবাব দিয়েছিল- ‘আমার তো কোনো স’মস্যা নেই!’ উত্তর পেয়ে আমার মনে হল এটিই সুযোগ তার সঙ্গে অ,ন্ত,র,ঙ্গ হওয়ার। আমি আ’কর্ষণ করার চেষ্টা করছিলাম তাকে। কিন্তু কোনো ফ’লই হচ্ছিল না।

কোনোভাবেই তাকে উ’ত্তে’জি’ত করতে পারলাম না। আমি বুঝতে পা’রছিলাম না যে এটি নিয়ে কার সঙ্গে কথা বলব। একদিন হঠাৎ করেই জা’নতে পারলাম যে সে ন’পুং’সক। বিয়ের আগেই ডা’ক্তাররা এটি তাকে নি’শ্চিত করেছিল। সে নি’জে আর তার বাবা-মা স’বকিছুই জান’তেন। কিন্তু আমাকে কিছু জা’নানো হয়নি। আ’মাকে ধোঁকা দেয়া হয়েছে। আমি সত্যিটি জেনে ফে’লেছিলাম; কিন্তু তার কো’নো ল’জ্জা ছিল না এটি নিয়ে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.