মাত্র ২০ লাখ রুপিতে কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে ভিড়ালো ইয়র্কার মাস্টার বোলার

বাবা গোপাল অরোরা কর্মসূত্রে একজন দুধ বিক্রেতা। পারিবারিকভাবে খুব বেশি স্বচ্ছল না হওয়ায় বাবার ব্যবসার স্বার্থে ডেলিভারি ম্যানের কাজ সামলিয়েছেন বৈভব অরোরা।

যদিও সেই সময় তিনি হিমাচল প্রদেশের হয়ে খেলাই শুরু করেননি। তবে বড় কোনো পর্যায়ে সুযোগ পাওয়ার আগে অবাদে সামলিয়েছেন ডেলিভারি ম্যানের কাজ।

বয়স বেড়েছে, সময়ও বদলে গেছে। পাঞ্জাবি মহল্লার সেই ডেলিভারি ম্যান এখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের নতুন ইয়র্কার মাস্টার।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) এবারের আসরের নিলাম থেকে ভিত্তিমূল্য ২০ লাখ রুপিতে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছে বলিউড তারকা শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

ছেলে দল পাওয়ার পর থেকে দুধ বিক্রেতা বাবা গোপাল গ্রাহকদের বাসায় দুধ দিয়ে আসতে গিয়ে সবাইকে বলছেন যে তাঁর ছেলে এবার আইপিএলে সুযোগ পেয়েছে।

মূলত এবারের ‍মুস্তাক আলী ট্রফিতে ভালো করার সুবাদে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্টে দল পেয়েছেন ২৩ বছর বয়সি এই পেসার।

মুস্তাক আলি ট্রফিতে ৬ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে এই পেসার নজর কেড়েছিলেন। সেই সঙ্গে হিমাচল প্রদেশকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন বৈভব।

তাঁর বোলিংয়ের বিশেষত্ব নিখুঁত ইয়র্কার ও দারুণ সব ইন সুইং। আইপিএলে দল পাওয়ার তিন দিন পর বিজয় হাজারে ট্রফিতে হ্যাটট্রিক করেছেন হিমাচলের এই পেসার।

স্বপ্নের মতো এক সপ্তাহ পার করা বৈভব বলেন, ‘গত সপ্তাহটি আমার জন্য ঘটনাচক্রে পরিণত হয়েছিল। প্রথমে আইপিএল চুক্তি তারপর হ্যাটট্রিক।

আমি সবসময় আমার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটকে মনে লালন করব এবং বলটি আমার সঙ্গে রখব। আইপিএলে সুযোগ পাওয়া আমার জন্য বিশাল ব্যাপার। দারুণ সব পেসার নিয়ে কলকাতা শীর্ষস্থানীয় দল।’

মুস্তাক আলী ট্রফিতে প্রথমবার সুযোগ পেয়েই নজর কেড়েছিলেন আইপিএলের দলগুলোর। যে কারণে সপ্তাহ দুয়েক আগে ট্রায়ালের জন্য তাঁকে ডেকেছিল কলকাতা।

যেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বোলিং কোচ অভিষেক নায়ারের নজরে পড়েছিলেন এই পেসার। আর তাতে নিলাম থেকে তাঁকে দলেও নেয় কলকাতা।

এর আগে ১৩তম আইপিএল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের (বর্তমানে পাঞ্জাব কিংস) নেট বোলার হিসেবে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি।

যেখানে ক্রিস গেইল, লোকেশ রাহুল, নিকোলাস পুরান ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে বোলিং করে নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন। এবারের আইপিএলের টাকা পেলে তাঁর বাবাকে উপহার দিতে চান। সেই সঙ্গে বাবা-মায়ের জন্য নতুন একটি বাড়ি কিনতে চান।

এ প্রসঙ্গে বৈভব বলেন, ‘আশা করি আমি ক্রিকেটে ভালো করব এবং একদিন ভারতের হয়ে খেলব। আমরা যৌথ পরিবারে ছোট্ট একটি ঘরে থাকি।

আমি আমার বাবা মায়ের জন্য একটা বাড়ি কিনতে চাই। আমি তাদেরকে ধৈর্য্য ধরতে বলি। আমি কঠোর পরিশ্রম করে উচ্চ পর্যায়ে খেলতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আইপিএলের টাকা পেলে চুক্তির টাকা বাবাকে উপহার দেব। এটি খুশি বেশি নয় তবে সে এটি নিয়ে খুব খুশি হবে। তিনি খুব রোমাঞ্চিত।

আমি যখন ১৪ বছর বয়সে খেলা শিখি তখন সে আমাকে চণ্ডিগড় পাঠাতে গিয়ে ঘাবড়ে গিয়েছিল। আমার কাছে খুব বেশি টাকা ছিল না তবে আমার কোচ এবং স্কুল সাহায্য করেছে।’

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.