সেদিনের প্রেম আজও ব্যথা দেয় রতন টাটাকে, ৮৫ তম জন্মদিনে ‘আবেগঘন পোস্ট’ ভাইরাল

টাটা সন্স সংস্থার চেয়ারম্যান এমেরিটাস রতন টাটা আজ ৮৫ বছরে পা দিলেন। দেশজুড়ে তাঁর অগণিত ভক্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বড় বড় নামও। সফল শিল্পপতি হওয়া ছাড়াও, তাঁর মানবিক দিকটাও আজ আর অজানা নেই। মানুষের কল্যাণে নানান কাজ করেছেন তিনি। সেই কারণেই ধনকুবের ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ভালবাসেন অজস্র সাধারণ মানুষ।

ভারতীয় ব্যবসা জগতের অন্যতম সম্মানিত ব্যক্তিত্ব তিনি। রতন টাটার নাম প্রত্যেক ভারতীয়ের কাছে সুপরিচিত। আজ রতন টাটার জন্মদিন এবং আজ তিনি তার জীবনের ৮৫ বছর পূর্ণ করেছেন। রতন এর আগে তিনি টাটা সন্সের চেয়ারম্যান হিসাবে টাটা গ্রুপকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এখন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান হিসাবে তিনি দেশের উন্নয়নে সর্বদা সামিল থেকেছেন।

১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন দেশের অন্যতম সফল শিল্পপতি রতন টাটা । তিনি তার পরোপকারের জন্য যতটা বিখ্যাত , ততটাই বিখ্যাত তাঁর ব্যবসায়িক নীতির জন্য। যখনই তাঁকে নিয়ে আলোচনা হয়, তখনই প্রশ্ন ওঠে কেন বিয়ে করেননি রতন টাটা। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। এর উত্তর দিয়েছেন স্বয়ং রতন টাটা।

তার প্রেমের গল্প ছাড়াও জীবনের অনেক মজার দিক শেয়ার করেছেন ‘হিউম্যানস অফ বোম্বে’-এর সঙ্গে। আজ ৮৫ তম জন্মদিনে সেই কাহিনী ফের ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর জীবনের অজানা নানা দিন সম্পর্কে জানার ইচ্ছে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছাও জানান।’হিউম্যানস অফ বোম্বে’-এর সঙ্গে রতন টাটার কথোপকথন ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা হয়েছে। আজ তাঁর ৮৫ তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক, কেন বিয়ে করেননি রতন টাটা।


তিনি লেখেন, ‘আমার ছেলেবেলা বেশ ভালোই ছিল। আমার ভাই এবং আমি বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের কারণে আমাদের দুজনকেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। সেই সময় ‘বিবাহবিচ্ছেদ’ সমাজ ভালভাবে মেনে নেয়নি। আজকের মত তখন এটা আর পাঁচটা সাধারণ বিষয়ের মত ছিল না। তিনি লেখেন, আমার দিদা ছোট থেকেই আমাকে ভালবাসতেন। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। তিনি সবসময় আমাদের বলেছেন কিভাবে জীবনে সবরকম পরিস্থতিতেই শান্ত থাকতে হয়। যেকোন মূল্যে আমাদের ‘সুনাম’ ধরে রাখতে হবে।

ইন্সটাগ্রাম পোস্টে বাবার সঙ্গে মতপার্থক্যের কথাও উল্লেখ করেন রতন টাটা। তিনি বলেন, ‘আমি বেহালা শিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার বাবা চাইতেন আমি পিয়ানো শিখি। আমি উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন আমি ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি অর্জন করি।

আমি একজন আর্কিটেক হতে চেয়েছিলান কিন্তু আমার বাবা বলতেন আমি কেন ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই না! শেষে তিনি পড়াশোনার জন্য আমেরিকায় যান। ‘মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। কিন্তু পরে আর্কিটেকচারের ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষে লস অ্যাঞ্জেলেসে চাকরি শুরু করেন এবং প্রায় দুই বছর চাকরিও করেন রতন টাটা।

প্রেমের কথা বলতে গিয়ে রতন টাটা বলেন, এটা একটা দুর্দান্ত অনুভূতি। চাকরি করতে গিয়ে একই শহরে আমার পছন্দের প্রিয় মেয়েটির সঙ্গে দেখা দেখা। তার প্রেমে পড়তে বাধ্য হয়েছিলাম আমি। সেসময় আমার দিদার শরীর ভাল ছিল না। দিদাকে দেখতে দেশে ফেরা। আমরা দুজনেই ভারতে এসে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলাম। ১৯৬২ সালে ভারত-চিন যুদ্ধের পরিস্থিতিতে মেয়েটির বাবা-মা চাননি যে সে ভারতে আসুক। এভাবেই আমাদের স্বপ্নের এই সম্পর্ক ভেঙে যায়।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.